দয়ালু দয়াময় আল্লার নামে।

 
Written By Sanjir Habib On Sep-20th, 2017

দয়ালু দয়াময় আল্লার নামে।

আলহামদুলিল্লাহ,
যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন,
আলো-আধার এনেছেন,
এর পরও কাফেররা শরিক করে।

তিনি তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।
ঠিক করেছেন সময়কাল।
সময়কাল ঠিক করা আছে উনার কাছে।
এর পরও তোমরা সন্দেহ করো।

উনি আল্লাহ! আসমানে-জমিনে।
জানেন তোমাদের প্রকাশ্য-গোপন।
জানেন তোমাদের কামাই।

এমন কোনো আয়াত আসে নি তাদের রব থেকে
যে তারা সে থেকে মুখ ফিরায় নি।

হক আসার পরে তারা সেটাকে মিথ্যা বললো।
শিগ্রি তাদের কাছে সেই খবর আসছে
যা নিয়ে তারা হাসাহাসি করে।

তারা কি দেখে না, তাদের আগের জেনারেশনগুলোকে কিভাবে ধ্বংশ করেছি?
দুনিয়াতে তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এমন করে,
যেভাবে তোমাদেরকে করি নি
আকাশকে পাঠিয়েছিলাম বৃষ্টি দিয়ে, নদী তাদের নিচে।
এরপর তাদেরকে ধ্বংশ করেছি গুনাহের কারনে।
আরম্ভ করেছি নতুন যুগ।

যদি আপনার উপর কাগজের কিতাব নাজিল করতাম।
সেটাকে হাত দিয়ে ছুয়ে কাফেররা বলতো, এ পরিষ্কার যাদু।

তারা বলে, কেন ফিরিস্তা নামান না?
আমি ফিরিস্তা নামালে বিষয়টা শেষ হয়ে যেতো,
এর পর আর সময় দেয়া হতো না।

ফিরিস্তা পাঠালেও, তাকে মানুষ করে পাঠাতাম
ঐ কাপড় পড়িয়ে যা তারা পড়ে।

আপনার আগেও রাসুলদের নিয়ে হাসাহাসি হতো।
এর পর ব্যঙ্গকারীদের কথাই ব্যঙ্গকারীদের ঘিরে ফেলে।

বলে দিন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমন করে দেখো মিথ্যাবাদিদের কি পরিনতি হয়েছিলো।
বলে দিন, আকাশে-জমিনে যা আছে এগুলো কার?
বলেন আল্লাহর!
উনি নিজের নফসের উপর রহমত লিখেছেন।
তোমাদেরকে একত্রিত করবেন কিয়ামতের দিন, এতে সন্দেহ নেই।
যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে, তারা বিশ্বাস করবে না।

দিনে-রাতে যা শান্ত হয় সব উনার। উনি সব শুনেন, জানেন।
বলে দিন, আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে রক্ষক নিবো?
অথচ উনি আসমান জমিনের প্রতিষ্ঠাতা!

উনি খাওয়ান, উনাকে কেউ খাওয়ায় না।
বলে দিন, আমাকে আদেশ করা হয়েছে, যেন আমি অনুগতদের মাঝে প্রথম হই!
আর আপনি মুশরিকদের কেউ হবেন না।

বলুন, আমি ভয় করি-
আমার রবের অবাধ্য হলে মহা দিনের শাস্তির।
সেদিন যাকে পার করা হবে তার উপর রহম করা হলো।
এটা পরিষ্কার বিজয়।

যদি আল্লাহ আপনাকে বিপদ দেন তবে সেটা সরানোর কেউ নেই, উনি ছাড়া।
যদি ভালো দেন তবে উনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাশীল।
উনি ক্ষমতাসীন উনার দাসদের উপর।
উনি বিচক্ষন, সব জানেন।

বলেন, সবচেয়ে বড় সাক্ষি কি?
বলে দিন, আমার আর তোমাদের মাঝে সাক্ষি আল্লাহ!
আমাকে এই কোরআন ওহি দিয়ে পাঠিয়েছেন
যেন এ দিয়ে তোমাদেরকে হুশিয়ার করি
আর যার যার কাছে এটা পৌছে।

তোমরা কি সাক্ষ্য দিচ্ছো আল্লাহর সাথে আরো ইলাহ আছে?
বলেন, এই সাক্ষ্য আমি দেবো না।
বলেন, বরং উনি একমাত্র ইলাহ!
আর আমি তোমাদের শিরক থেকে মুক্ত।

যাদেরকে কিতাব দিয়েছি
তারা কিতাব এমন করে চিনে, যেমন সন্তানদের চিনে।
যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে তারা বিশ্বাস করবে না।

তার থেকে আর বড় জালিম কে আছে,
যে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়?
বা উনার আয়াতকে মিথ্যা বলে?
জালেমদের উনি সফল করেন না।

সে দিন তাদের সবাইকে এক করবো।
এর পর মুশরিকদের জিজ্ঞাসা করবো
কোথায় তোমাদের অংশিদার?
যাদেরকে কল্পনা করতে?

এর পরে তাদের ফিতনা থাকবে না
শুধু এ ছাড়া,
যে তারা বলবে আমাদের রব আল্লাহর কছম
আমরা মুশরিক ছিলাম না!

দেখেন কিভাবে তারা নিজেদের উপর মিথ্যা বলছে।
দূর হয়ে গিয়েছে আগের বানোয়াট কথা।

তাদের কেউ আপনার কথা শুনতে থাকে।
আমি তাদের অন্তরের উপর আবরন দিয়ে দিয়েছি যেন না বুঝে,
তাদের কানে বধিরতা।

সব নিদর্শন দেখেও তারা বিশ্বাস আনবে না।
এমন কি কাফেররা তর্কে এসে আপনাকে বলে,
এ সব অতীতের কাহিনী।

তারা এ থেকে নিষেধ করে, এ থেকে পলায়।
তারা শুধু নিজেদেরকে ধংশ করছে, না বুঝে।

যদি তখন দেখতে পেতেন,
যখন তাদেরকে আগুনের কাছে দাড় করানো হবে।
বলবে হায়!
যদি আমরা ফিরে যেতে পারতাম,
আর আমাদের রবের আয়াতকে মিথ্যে না বলতাম।
যদি আমরা মু'মিনদের কেউ হতাম।

তাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে যা আগে গোপন ছিলো।
ফিরে গেলেও তারা নিষিদ্ধ কাজেই ফিরে যেতো।
তারা মিথ্যাবাদী।

তারা বলে এই দুনিয়ার জীবনটাই সব।
আমাদের আরেকবার জীবিত করা হবে না।

যদি দেখতে পেতেন,
যখন তাদেরকে দাড় করানো হবে তাদের রবের সামনে।
উনি বলবেন, এটাই কি সত্য না?
তারা বলবে, হ্যা আমাদের রব!
উনি বলবেন, তবে আযাব ভোগ করো তোমাদের কুফরির জন্য।

তারা ক্ষতিগ্রস্থ যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতকে মিথ্যা বলে।
হটাৎ কিয়ামত চলে আসবে।
তারা বলবে, আফসোস! আমরা অলসতা করতাম।
নিজেদের পিঠে নিজ পাপের বোঝা তুলবে।
জেনে নিয়ো, তাদের বোঝা নিকৃষ্ট।

দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া কিছু না।
আখিরাতের ঘর তাকওয়াকারীদের জন্য উত্তম।
তোমরা কি বুঝো না?

আমি জানি, তাদের কথা আপনাকে কষ্ট দেয়।
আপনাকে তারা মিথ্যাবাদী বলে না-
বরং জালেমরা আল্লাহর আয়াতকে অবিশ্বাস করে।

আপনার আগের রসুলদেরকেও মিথ্যাবাদি বলা হতো।
উনারা এর উপর সবর করতেন।
অত্যাচারিত হতেন, আমার সাহায্য আসার আগ পর্যন্ত।
আল্লাহর কালামকে কেউ বদলাতে পারে না।
রসুলদের কিছু খবর আপনার কাছে পৌছলো।

তাদের প্রত্যাখ্যান যখন আপনার কাছে বড় মনে হয়-
যেন পারলে মাটিতে সুড়ঙ্গ খুজতেন
বা আকাশে উঠার সিড়ি-
আর তাদেরকে প্রমান এনে দিতেন।
অথচ আল্লাহ চাইলে তাদেরকে এক সাথে হিদায়াত দিতে পারতেন।
আপনি জাহেলদের কেউ হবেন না।

যারা শুনে তারা জবাব দেয়।
আর মৃত - তাদেরকে আল্লাহ পূনঃজীবিত করবেন,
এর পর উনার দিকে ফিরা।

তারা বলে,
কোনো নিদর্শন আসে না কেন তার উপর? তার রব থেকে?
বলে দিন, আল্লাহর ক্ষমতা আছে নিদর্শন পাঠানোর,
তাদের অধিকাংশ জানে না।

পৃথিবীর বুকে যত জীব আছে,
যত পাখি উড়ে দুই ডানায়,
সব তোমাদের মত উম্মাহ।
কিতাবে কিছু বাদ রাখি নি।
এরপর তাদের রবের কাছে সবার হাশর।

যে আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে
সে বোবা-কালা অন্ধকারে।
যাকে ইচ্ছে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন,
যাকে ইচ্ছে সরল পথে চালান।

তাদেরকে বলেন,
বলতো যদি আল্লাহর আযাব আসে, বা কিয়ামত
তবে কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকবে? যদি সত্যবাদী হও।

বরং উনাকেই ডাকবে।
উনি সারিয়ে দেবেন যে কারনে ডেকেছো, যদি চান।
তোমরা তখন ভুলে যাবে যাদের শিরক করেছো।

আপনার আগের উম্মতদের কাছেও রসুলদের পাঠিাতাম।
তাদেরকে দুঃখ-কষ্ট দিয়েছিলাম যেন তারা আকুতি করে।

তবে শাস্তি আসার পর তারা আকুতি কেন করে নি?
তাদের অন্তর কঠিন হয়েছিলো,
আর শয়তান তাদের কাজকে সুন্দর করে ধরেছিলো।

মনে করিয়ে দেবার পরও যখন তারা ভুলে গেলো,
তখন খুলে দেই সব কিছুর দরজা।
সব পেয়ে তারা খুশি হয়,
এর পর তাদেরকে ধরি, হটাৎ!
তারা হতাশ হয়ে যায়।

এর পর জালেমদের শিকড় কেটে গেলো,
আলহামদু লিল্লাহ, রাব্বিল আলামিন।

তাদেরকে বলেন,
বলতো যদি আল্লাহ তোমাদের দৃষ্টি-শ্রবন শক্তি তুলে নেন,
আর তোমাদের অন্তর সিল করে দেন,
তবে কোন ইলাহ ফিরিয়ে দিবে, আল্লাহ ছাড়া?
দেখেন আমি কত ভাবে আয়াত বর্ননা করছি।
এর পরও তারা এড়িয়ে চলে।

বলে দিন, যদি তোমাদের উপর আল্লাহর আযাব আসে হটাৎ দৃশ্যমান হয়ে
তবে জালেম কওমই ধ্বংশ হবে।

আমি রসুলদের পাঠাই সুসংবাদ আর হুশিয়ার জানাতে।
যে ঈমান আনে সৎ কাজ করে তার ভয় নেই, দুঃখিত হবে না।
আর যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে,
তাদেরকে আযাব স্পর্শ করবে, ফাসেকির কারনে।

বলে দিন,
আমি বলছি না আমার কাছে আল্লাহর খাজানা আছে।
আর গায়েবের খবরও আমার জানা নেই।
আর তোমাদেরকে এও বলছি না যে আমি ফিরিস্তা।
আমি শুধু তাই অনুসরন করি, যে ওহি আমার উপর আসে।
বলুন,
অন্ধ আর অন্ধ-না, দুজন কি সমান?
তোমরা চিন্তা কর না?

এটা দিয়ে আপনি সাবধান করেন তাদেরকে,
যাদের ভয়- তাদের রবের কাছে একত্রিত হওয়া।
উনি ছাড়া কোনো রক্ষাকারী-সুপারিশকারী নেই।
তাই তারা যেন তাকওয়া করে।

আর তাদেরকে দূর করবেন না,
যারা নিজেদের রবকে সকাল-সন্ধায় ডাকে, সন্তুষ্টি চেয়ে।
তাদের কোনো হিসাব আপনার উপর নেই।
আপনার কোনো হিসাব তাদের উপর নেই।
দূর করলে বরং আপনি জালেমদের একজন।

এভাবে তাদের কিছুদেরকে দিয়ে অন্যদের পরিক্ষায় ফেলি,
যেন তারা বলে, ওরাই কি আমাদের মাঝে আল্লাহর পছন্দের দল?
আল্লাহ জানেন শোকর আদায়কারীদের।

আপনার কাছে যখন আমার আয়াতে বিশ্বাসিরা আসে,
বলুন, তোমাদের উপর সালাম!
তোমাদের রব নিজের উপর রহমত লিখেছেন যে,
তোমাদের মাঝে যারা না জেনে পাপ করে,
এর পরে তৌবা করে, নেক কাজ করে,
তবে উনি গাফুরুর রহিম।

এভাবে আয়াত বর্ননা করি, যেন পাপীদের পথ স্পষ্ট হয়।

বলে দিন,
তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ডাকো,
তাদের ইবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে।
তোমাদের খুশি মতো আমি চলবো না।
তাহলে আমি বিপথগামী হবো, সুপথে থাকবো না।

বলে দিন, আমার রবের পাঠানো প্রমানের উপর আমি আছি।
তোমরা সেটাকে মিথ্যা বলেছো।
তোমরা এখনই যা চাও, সেটা আমার কাছে নেই।
স্বিদ্ধান্ত দেয়ার মালিক আল্লাহ।
উনি সত্য বলেন, শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী।

তোমরা এখনই যা চাচ্ছো তা যদি আমার কাছে থাকতো,
তবে আমার আর তোমাদের মাঝে সব এখানেই শেষ হতো।
আল্লাহ জালেমদের ব্যপারে জানেন।

উনার কাছে গায়বের চাবি।
এসব অন্য কেউ জানে না, উনি ছাড়া।
উনি জানেন স্থলে-জলে যা আছে।
উনার জ্ঞানের বাইরে -
না কোনো পাতা ঝড়ে,
না কোনো শষ্যের-দানা পড়ে মাটির অন্ধকারে,
না শুকনো, না ভেজা।
সবকিছু লিখা আছে পরিষ্কার কিতাবে।

তিনি রাতে তোমাদের জীবন নিয়ে নেন।
জানেন তোমরা দিনে যা করো,
তাই দিনে তোমাদেরকে জীবিত করেন সময়কাল পূর্ন করতে।
এর পর উনার কাছে ফিরা।
তোমাদেরকে জানানো হবে যা করে এসেছো।

উনি বান্দাদের উপর রক্ষাকারী,
তোমাদের উপর হেফাজতকারী পাঠান।
এমন কি যখন কারো মৃত্যু আসে,
তখন উনি অনেককে পাঠান যারা জীবন নেয়।
তারা কাজে হেলা করে না।

এর পর আল্লাহর কাছে ফিরা- তাদের সত্য মাওলা!
বিচার উনার উপর, সবচেয়ে দ্রুত হিসাব নেন।

বলুন, কে তোমাদের জলে-স্থলের অন্ধকারে রক্ষা করেন?
যখন উনাকে ডাকো কাতর হয়ে মনে মনে-
যদি এ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেন তবে আমরা শোকরকারী হবো।

বলে দিন, তখন আল্লাহ তোমাদের উদ্ধার করেন সেই বিপদ থেকে,
আর সমস্ত বিপদাপদ থেকে।
এর পরও তোমরা শিরক করো।

বলে দিন,
উনি উপর থেকে বা নিচ থেকে তোমাদের আযাব পাঠানোর ক্ষমতা রাখেন।
অথবা তোমাদের দিশেহারা করে দিতে পারেন দলাদলি করিয়ে।
একদলকে ভোগ করাতে পারেন অন্য দলের আক্রমন।
দেখুন কত ভাবে আমি আয়াত বর্ননা করি যেন তারা বুঝে।

তোমার কওম একে মিথ্যা বলে, অথচ এটাই সত্যি।
বলে দিন, আমি কি তোমাদের জন্য উকিল না?

প্রতিটা ভবিষ্যৎবানীর নির্দিষ্ট সময় আছে,
তারা শিগ্রি জানতে পারবে।

যখন দেখবেন তারা আমার আয়াত নিয়ে বাজে কথা বলছে,
তখন তাদের থেকে দূরে সরে যান, যতক্ষন না অন্য প্রসংগে যায়।
যদি শয়তান আপনাকে ভুলিয়ে দেয়,
তবে মনে পড়ার পর জালেমদের সাথে বসে থাকবেন না।

তাকওয়াকারীদের উপর ঐ সব লোকদের হিসাবের দায়িত্ব না।
বরং দায়িত্ব শুধু মনে করিয়ে দেয়া, যেন তারাও তাকওয়া করে।

যারা নিজেদের দ্বীনকে খেল-তামাশা বানিয়েছে তাদেরকে ছেড়ে দিন।
দুনিয়া তাদের ধোকায় ফেলেছে।
আর এই কোরআন দিয়ে উপদেশ দিতে থাকেন
যেন কেউ নিজের কামাই দিয়ে ধ্বংশ না হয়।
তার জন্য কোনো ওলি-শাফায়াতকারী নেই, আল্লাহ ছাড়া।
মুক্তির জন্য সেদিন সব দিতে চাইলেও গ্রহন করা হবে না।
এদের কামাই তাদেরকে ধ্বংশ করেছে।
কুফরির জন্য তাদের শাস্তি ফুটন্ত খাবার পানি আর কষ্টকর আযাব।

বলে দিন,
আমরা কি আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ডাকবো?
যে আমাদের উপকার করতে পারে না, ক্ষতিও না।
আল্লাহ আমাদের পথ দেখানোর পর কি পেছনে হাটবো?
তার মত, যাকে শয়তানরা উসকে দিয়ে হয়রান করে দিয়েছে!
তার বন্ধুরা তাকে পথে ডাকছে - আমাদের দিকে আসো!
বলে দিন, আল্লাহর পথই একমাত্র পথ।
আমাদের হুকুম করা হয়েছে রাব্বুল আলামিনের কাছে আত্মসমর্পন করতে।
আর নামাজ কায়েম করতে, উনাকে ভয় করতে।
উনার কাছে তোমরা একত্রিত হবে।

উনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন, সত্যিকারে।
যে দিন বলেন হও, হয়ে যায়, উনার কথা সত্য।
যে দিন শিংগায় ফু দেয়া হবে, সে দিন রাজত্ব তার।
জানেন অদৃশ্য, জানেন দৃশ্য।
উনি বিচক্ষন, সব জানেন।

যখন ইব্রাহিম উনার পিতা আজরকে বললেন,
আপনারা কি মূর্তিগুলোকে ইলাহ বানিয়েছেন?
আমি দেখছি আপনি আর আপনার কওম স্পষ্ট ভুলের মাঝে আছেন।

এভাবে ইব্রাহীমকে আসমান-জমিনের রাজত্ব দেখালাম,
যেন শক্ত বিশ্বাস আনেন।

যখন রাত্রি ঢেকে ফেললো, উনি তারকা দেখলেন।
বললেন, এটা আমার রব।
যখন ডুবে গেলো বললেন,
যা ডুবে যায় তা আমি পছন্দ করি না।

যখন চাদ উঠতে দেখলেন, বললেন এটা আমার রব।
যখন ডুবে গেলো, বললেন যদি আমার রব আমাকে পথ না দেখান
তবে আমি পথভ্রষ্টদের একজন হবো।

যখন সূর্য উঠতে দেখলেন বললেন,
এটা আমার রব, এটা সবচেয়ে বড়।
যখন ডুবে গেলো বললেন,
আমার কওম! তোমাদের শিরক থেকে আমি পবিত্র।
আমি মুখ ঘুরালাম একমাত্র তার দিকে,
যিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন।
আমি মুশরিকদের কেউ না।

উনার কওম উনার সাথে ঝগড়া আরম্ভ করলো।
উনি বললেন,
তোমরা কি আল্লাহকে নিয়ে আমার সাথে ঝগড়া করছো?
অথচ উনি আমাকে পথ দেখিয়েছেন।
তোমরা যাদেরকে শিরক কর তাদেরকে ভয় করি না,
বরং আমার রব যা চান সেটাকে ভয় করি।
সব কিছুর উপর আমার রবের জ্ঞান।
তোমরা কি মনে আনো না?

তোমরা যাদের শিরক কর, তাদেরকে আমি কি করে ভয় করবো?
অথচ তোমারা আল্লাহর সাথে শিরক করতে ভয় করো না!
এ অধিকার তোমাদের দেয়া হয় নি।
দু দিকের মাঝে কে বেশি হকদার নিরাপত্তা দিতে?
যদি জানতে।

যারা ঈমান এনেছে, আর ঈমানের সাথে জুলুম মিশায় নি,
তাদের জন্য নিরাপত্তা, তারা হিদায়াত প্রাপ্ত।

এ ছিলো আমার যুক্তি
যা ইব্রাহীমকে দিয়েছিলাম তার কওমের উপর।
যাকে ইচ্ছে আমি বহুস্তর উপরে উঠাই।
আপনার রব বিজ্ঞ, জানেন।

আর উনাকে দান করেছি ইসহাক, ও ইয়াকুব।
সবাইকে পথ দেখিয়েছি, নুহকে পথ দেখিয়েছি তারও আগে।
উনার বংশধারায় এসেছে দাউদ, সোলায়মান, আইয়ুব, ইউসুফ, মুসা, হারুন।
এভাবে সৎ লোকদের পুরষ্কার দেই।
জাকারিয়া, ইয়াহইয়া, ঈসা, ইলইয়াস সবাই নেককার ছিলেন।
ঈসমাইল, ইয়াসাআ, ইউনুস, লুত প্রত্যেককে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।
তাদের পূর্বপুরুষ, পরবর্তি বংশধর, ভাইদের থেকে নির্বচিত করেছি ও সরল পথ দেখিয়েছি।

এটা আল্লাহর হিদায়াত,
যা দিয়ে উনার আবেদদের মাঝে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন।
যদি তারা শিরক করতো তবে তাদের আমল বাতিল হয়ে যেতো।
উনাদেরকে কিতাব, হুকুমত, নবুয়ত দিয়েছি।
যদি তারা এতে কুফরি করতো তবে
দায়িত্ব দিতাম এমন কওমকে যারা কুফরি করতো না।

আল্লাহ তাদের সৎ পথে চালিয়েছেন,
তাই তাদের সৎপথের অনুসরন করুন।
বলে দিন, এর জন্য আমি তোমাদের কাছে টাকা চাইনা।
এ মনে করিয়ে দেবার জন্য, সব দুনিয়াকে।

তারা আল্লাহকে যোগ্য সম্মান করে নি,
যারা বলে: কোনো মানুষের উপর আল্লাহ কিছু নাজিল করেন নি।
বলেন, মুসা যে কিতাব এনেছিলো তা কে নাজিল করেছিলো?
সেটা ছিলো মানুষের জন্য নূর আর হিদায়াত।
যার কিছু তোমরা কাগজে প্রকাশ করো, অধিকাংশ গোপন করো।
তোমাদের শেখানো হয়েছিলো যা তোমরা বা তোমাদের বাপ-দাদারা জানতো না।
বলেন: আল্লাহ!
এর পর তাদেরকে তর্ক খেলার মাঝে ছেড়ে দিন।

এই কিতাব নাজিল করেছি বরকতময় করে,
এর আগের গুলোর সমর্থক করে।
যেন আপনি মক্কা আর আশে-পাশের লোকদের সাবধান করতে পারেন।
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে তারা
এতে বিশ্বাস করে আর নামাজের হেফাজত করে।

তার থেকে বড় জালিম কে, যে আল্লাহকে নিয়ে মিথ্যে বলে?
যে বলে, আমার উপর ওহি এসেছে, অথচ তার উপর কোনো ওহি আসে নি।
যে বলে, আল্লাহ যেমন নাযিল করেছেন, আমিও নাজিল করে দেখাচ্ছি।
যদি দেখতেন, যখন-
যালেমরা থাকবে মৃত্যু যন্ত্রনায়।
ফিরিস্তারা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তোমাদের জান বের করে দাও!
তোমাদের জন্য আজকে অপমানকর আযাব,
আল্লাহকে নিয়ে যেই মিথ্যে বলতে তার কারনে।
উনার আয়াতের সামনে তোমরা অহংকার করতে।

তোমরা একা এসেছো, যেভাবে প্রথম সৃষ্টি করেছিলাম।
যা দিয়েছিলাম সব পিছে ফেলে।
তোমাদের সেই সুপারিশকারীদের দেখছি না,
যাদেরকে শিরকে ধারনা করতে।
তোমাদের সম্পর্ক কেটে গিয়েছে, দাবি সরে গিয়েছে।

আল্লাহ দানা-বীজকে ফুটান।
মৃত থেকে জীবিত বের করেন, আবার জীবিত থেকে মৃত।
এ হলেন আল্লাহ! কোথায় ধোকায় পড়ছো?

ভোরকে ফুটান, রাত করেন শান্তির।
হিসাব রাখার জন্য চাদ-সূর্য।
এসব নির্ধারিত মহান জ্ঞানীর।

উনি তারকা দিয়েছেন।
যেন স্থলে-জলের অন্ধকারে এ দিয়ে পথ খুজে পাও।
বিভিন্ন ভাবে আয়াত বললাম, জ্ঞানিদের জন্য।

তোমাদের বিস্তার করেছেন এক জন থেকে।
এর পর থাকার জায়গা, রাখার জায়গা দিয়েছেন।
বিভিন্ন ভাবে আয়াত বললাম, চিন্তাবিদদের জন্য।

আকাশ থেকে পানি নামান।
এ থেকে সকল গাছ বের করি।
এ থেকে সবুজ ফসল।
এ থেকে স্তরে স্তরে শস্য।
আর খেজুর গাছ, যার কাদি বেরিয়ে ঝুলে থাকে।
আংগুর, জলপাই, ডালিমের বাগান।
সব একই রকম, তবুও ভিন্ন।
দেখো সেই ফল, যখন তা ফলে আর পাকে।
এর মাঝে আছে বিশ্বাসিদের জন্য নিদর্শন।

তারা জ্বীনদের আল্লাহর সাথে শরিক করে, যাদেরকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন।
পুত্র-কন্যা আছে বলে দোষারোপ করে, না জেনে।
আল্লাহ পবিত্র তাদের বর্ননার উপরে।

তিনি শুরু করেছেন আসমান-জমিন।
কি করে উনার পুত্র হবে যেখানে সংগী নেই?
বরং উনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, উনি সব জানেন।

উনিই আল্লাহ, তোমাদের রব!
উনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।
সব কিছুর স্রষ্টা, তাই উনার ইবাদত করো।
উনি সব কিছুর উপর উকিল।

দৃষ্টি উনাকে পায় না, উনি সকল দৃষ্টিকে পান।
উনি সুক্ষ্ম জ্ঞানী।

তোমাদের রবের থেকে এসেছে অন্তরদৃষ্টি।
যে দেখতে পাবে, তা নিজের জন্য।
যে অন্ধ হবে, তা তার উপর।
আমি তোমাদের রক্ষাকারী না।

বিভিন্নভাবে আয়াত বর্ননা করছি
যেন তারা বলে, আপনি দরস নিয়েছেন।
জ্ঞানিদের কাছে তা বর্ননা করার জন্য।

আপনার রব থেকে যে ওহি এসেছে সেটার অনুসরন করুন।
উনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।
এবং মুশরিকদের থেকে সরে যান।

যদি আল্লাহ তাই চাইতেন তবে তারা শিরক করতো না।
আপনাকে তাদের রক্ষাকারী করি নি,
আপনার উপর তাদের দায়িত্ব না।

আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেগুলোকে তারা ডাকে,
সেগুলোকে গালি দিবে না।
তাহলে তারাও শত্রুতা করে আল্লাহকে গালি দেবে, না জেনে।
এভাবে সব জাতির কাছে নিজেদের কাজকে সুন্দর করে রাখি।
এরপর তাদের রবের কাছে ফিরবে।
তাদের জানানো হবে কি করে এসেছে।

শক্ত শপথে তারা আল্লাহর নামে কসম করে যে-
কোনো নিদর্শন আসলে তারা বিশ্বাস করতো।
বলে দিন নিদর্শন আল্লাহর কাছে।
কে তোমাদের বুঝাবে! নিদর্শন আসলেও তারা বিশ্বাস করতো না।

আমি তাদের অন্তর আর চোখকে ঘুরিয়ে দেবো,
যে রকম তারা প্রথমবার এতে বিশ্বাস করে নি।
তাদেরকে ছেড়ে দেবো নিজেদের অবাধ্যতার মাঝে বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরার জন্য।

যদি তাদের উপর ফেরেস্তা নামাতাম,
আর মৃতরা তাদের সাথে কথা বলতো,
আর সমস্ত কিছু তাদের কাছে একত্র করতাম, মুখোমুখি -
তবুও তারা বিশ্বাস করতো না, যদি না আল্লাহ চান।
তাদের অধিকাংশ অজ্ঞ।

এভাবে প্রত্যেক নবীর মাঝে শত্রু দিয়েছি শয়তানকে
মানুষ আর জ্বীন থেকে।
তারা এক দল অন্যকে সাজানো ধোকার কথা শিখিয়ে দেয়।
আপনার রব চাইলে এ কাজ করতো না।

তাদের ছেড়ে দিন, তাদের বানোয়াট কথায়।
যেন যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না
তাদের অন্তর সে দিকেই ঝুকে থাকে।
যেন যারা খারাপ কাজে লেগে আছে
তারা তাতে লেগে থেকে সন্তুষ্ট থাকে।

আমি কি আল্লাহকে ছেড়ে অন্য বিচারক খুজবো?
অথচ উনি তোমাদের উপর কিতাব নাজিল করেছেন, বিস্তারিত।
যাদেরকে কিতাব দিয়েছি তারা জানে এটা সত্যি আপনার রব থেকে নাজিল।
আপনি সন্দেহকারীদের একজন হবেন না।

আপনার রবের কথা পূর্ন হয়েছে, সত্য আর ন্যয় দিয়ে।
উনার কথার পরিবর্তনকারী নেই!
উনি সব শুনেন জানেন।

দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের অনুসরন করলে
তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে দেবে।
তারা নিজ ধারনার অনুসরন করে,
মিথ্যা ধারনা থেকে কথা বলে।

আপনার রব জানেন কে পথ থেকে সরে গিয়েছে,
আর কে সরল পথে আছে।

অতঃপর যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়েছে তা থেকে খান,
যদি উনার আয়াতে বিশ্বাসি হন।

তোমরা কেন আল্লাহর নামে যা জবাই করা হয়েছে তা খাও না?
অথচ তোমাদেরকে বলে দেয়া হয়েছে, কি তোমাদের জন্য হারাম।
তবে নিরুপায় হলে ভিন্ন কথা।
অধিকাংশ লোক ইলেম ছাড়া মন মত চলে বিপথগামী হয়।
আপনার রব সীমা অতিক্রম কারীদেরকে জানেন।

আর গোপন-প্রাকাশ্য গুনাহ ছেড়ে দাও।
যারা গুনাহ করে তারা কাজের ফল পাবে।

আল্লাহর নামে যা জবাই হয় নি তা খেও না, এটা ফাসেকি।
শয়তানরা তাদের বন্ধুদের পরামর্শ দেয় তোমাদের সাথে তর্ক করতে।
তাদের অনুসরন করলে তোমরা মুশরিক হয়ে যাবে।

যে মৃত ছিলো এর পর জীবিত করেছি
তাকে নূর দিয়েছি, এ দিয়ে সে মানুষের মাঝে হাটে।
সে কি তার মত? যে অন্ধকারে, কখনো বের হবে না!
এভাবে কাফেরদের কাজ তাদের কাছে সাজিয়ে দেয়া হয়।

এভাবে প্রতি শহরে অপরাধীদেরকে নেতা বানাই,
যেন তারা সেখানে পরিকল্পনা করে।
তাদের সব পরিকল্পনা নিজেদের বিরুদ্ধে,
যদিও তারা বুঝে না।

তাদের কাছে আয়াত আসলে বলে
আল্লাহর রসুলকে যা দেয়া হয়েছে
সেই ভাবে আমাদেরকে না দিলে ঈমান আনবো না।
আল্লাহ জানেন রিসালাত উনি কোথায় পাঠাবেন।
পাপিরা আল্লাহর অপমান আর আর কঠিন শাস্তি ভোগ করবে,
তাদের পরিল্পনার জন্য।

আল্লাহ যার ভালো চান
তার অন্তরকে ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন।
যাকে বিপথগামী করতে চান,
তার অন্তরকে আটোসাটো সংকির্ন করে দেন যেন সে আকাশে উড়ছে।
এভাবে আল্লাহ যারা ঈমান আনে না, তাদের অন্তর ময়লা করে দেন।

এ আপনার রবের সরল পথ।
মনযোগীদের জন্য আয়াতকে বিশদ ব্যখ্যা করছি।
যাদের জন্য শান্তির ঘর আছে তাদের রবের কাছে।
উনি তাদের বন্ধু তাদের কাজের কারনে।

সেদিন তাদেরকে এক করা হবে।
হে জ্বীন! অনেক মানুষকে তোমরা নিয়েছো।
মানুষদের মাঝে জ্বীনদের বন্ধুরা বলবে
আমাদের রব!
আমরা তাদের থেকে, তারা আমাদের থেকে উপকার নিয়েছি।
এর পর আপনার শেষ সময় আমাদের কাছে চলে আসে।

উনি বলবেন, তবে আগুন তোমাদের জায়গা, সেখানে ঢুকবে,
আল্লাহ যাকে চান না, সে ছাড়া।
আপনার রব জ্ঞানী, জানেন।
এভাব আমি জালমদের দলে দলে বন্ধুত্ব করে দেই,
তাদের কামাইয়ের কারনে।

হে জ্বীন আর মানুষ!
আমি কি তোমাদের কাছে রাসুল পাঠাই নি? তোমাদের মাঝে থেকে?
তোমাদেরকে আমার আয়াত বলতো,
আর এই দিনের, এই সাক্ষাতের হুশিয়ারি জানাতো?
তারা বলবে, আমরা নিজেরা নিজেদের সাক্ষি।
দুনিয়ার জীবন তাদের বিভ্রান্ত করে রেখেছিলো।
তারা সাক্ষি যে নিজেরা কাফের ছিলো।

যেন এ না হয় যে,
আপনার রব কোনো শহরকে ধ্বংশ করেন তাদের জুলুমের কারনে
আর তারা জানে না কেন।

প্রত্যেকের কাজের জন্য তাকে একটা স্তর দেয়া হয়।
তারা যা করে এ ব্যপারে আপনার রব অজ্ঞ না।

আপনার রব অমুখাপেক্ষি, দয়াময়।
চাইলে তোমাদের সরিয়ে তোমাদের পরে যাদেরকে চান আনতে পারেন।
যেভাবে তোমাদেরকে এনেছেন অন্য কওমের বংশধর হিসাবে।

যা ওয়াদা করা হয়েছে তা নিশ্চিৎ আসবে।
তোমরা এড়াতে পারবে না।

বলে দিন, আমার কওম!
তোমাদের জায়গায় তোমরা কাজ করো, আমিও করছি।
কিছু দিন পর জানবে শেষ-আলয় কার।
জালেমরা সফল হয় না।

আল্লাহ যে ফসল আর পশু উৎপাদন করেন
তা থেকে তারা আল্লাহর জন্য ভাগ করে।
বলে এ আল্লাহর জন্য, এ আমাদের শরিকদের জন্য - ধারনা থেকে।
তাদের শরিকদের কিছু আল্লাহর কাছে পৌছে না,
আল্লাহর জন্য যা, তা তাদের শরিকদের কাছে পৌছে।
মন্দ তাদের বিচার।

এভাবে শরিকরা অধিকাংশ কাফেরদের কাছে
নিজের সন্তান হত্যাকে সুন্দর করে দেখায়।
তাদেরকে ধ্বংশ আর ধর্মের মাঝে বিভ্রান্ত করতে।
আল্লাহ চাইলে তারা এমনটা করতে পারতো না।
তাদেরকে তাদের বানোয়াট জিনিস সহ ছেড়ে দিন।

তারা বলে “এ জন্তু-ফসল নিষিদ্ধ।
কেউ খেতে পারবে না, যাদেরকে বলি তারা ছাড়া।”
ধারনা থেকে কথা।
আর কিছু পশুর ব্যপারে বলে, “এদের পিঠে চড়া নিষেধ।”
কিছু পশু আল্লাহর নাম না নিয়ে জবাই করে।
এসব আল্লাহর নামে বানানো কথা।
কথা বানানোর শাস্তি উনি তাদের দেবেন।

তারা বলে “এই পশুগুলো গর্ভে যা আছে
তার ভাগ পুরুষরা পাবে! মহিলাদের জন্য নিষেধ।
তবে বাচ্চা যদি মৃত হয় তবে সবার ভাগ সমান।”
এরকম ব্যখ্যা দেবার শাস্তি উনি তাদের দেবেন।
উনি জ্ঞানি, জানেন।

নিজেদের সন্তানদের যারা হত্যা করেছে, তাদের ক্ষতি হয়েছে।
বোকার মত, না জেনে।
আর আল্লাহর দেয়া রিজিক যারা হারাম করে
আল্লাহর নামে বানানো কথা বলে,
তারা পথভ্রষ্ট, পথপ্রাপ্ত না।

উনি বাগান দিয়েছেন, লতা, লতা না।
খেজুর গাছ, বিভিন্ন ফসল।
জলপাই, ডালিম, একই রকম, বিভিন্ন রকম।
সে ফল খাও যখন ফলে।
আর এর হক দিয়ে দাও, ফসল কাটার দিনে।
তবে অপচয় করো না, উনি অপচয়কারীকে ভালোবাসেন না।

পশু দিয়েছেন মাল বহন আর গোস্তের জন্য।
খাও আল্লাহর দেয়া রিজিক থেকে।
শয়তানের পথ অনুসরন করো না, সে স্পষ্ট শত্রু।

আট জোড়া - দুটো ভেড়া, দুটো ছাগল।
বলে দিন, “উনি কি নর দুটো হারাম করেছেন? নাকি মাদি দুটো?
নাকি যে দুটো গর্ভে আছে?
জেনে বলো, যদি সত্যবাদি হও।”

আর দুটো উট, দুটো গরু।
বলে দিন, “উনি কি নর দুটো হারাম করেছেন? নাকি মাদি দুটো?
নাকি যে দুটো গর্ভে আছে?
তোমরা দেখেছিলে আল্লাহকে এ শিক্ষা দিতে?”
তার থেকে বড় জালিম কে? যে আল্লাহকে নিয়ে মিথ্যা বানিয়ে বলে
মানুষকে না জেনে পথভ্রষ্ট করতে।
আল্লাহ জালেমদের পথ দেখান না।

বলে দিন, আমার কাছে যে ওহি আসে
তাতে খাওয়ার মত হারাম কিছু পাই নি এ ছাড়া-
মৃত, রক্ত যেটা গড়িয়ে পড়ে, শুকরের গোস্ত যা অপবিত্র,
যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে জবাই হয়েছে, এ পাপ।
কিন্তু যে নিরুপায়, অনিচ্ছায় আর মাত্রা না ছাড়ায়-
তবে আপনার রব দয়ালু ক্ষমাশীল।

ইহুদিদের জন্য হারাম করেছিলাম সব পশু যার থাবা আছে।
আর ভেড়া আর গরুর চর্বি, তবে
যা পিঠ, পেট আর হাড়ের সাথে থাকে তা ছাড়া।
এটা তাদের অবাধ্যতার শাস্তি, আমি সত্য বলি।

তারা যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলে,
তবে বলে দিন “তোমাদের রব বিস্তৃত রহমতের মালিক।
তবে পাপিদের থেকে উনার শাস্তি সরবে না।”

যারা শিরক করে তারা বলবে,
“আল্লাহ চাইলে আমরা, বাপ-দাদারা শিরক করতো না।
আমরা কিছু হারাম করতাম না।”
তাদের আগের লোকেরাও একই মিথ্যা বলতো,
যতক্ষন না আমার শাস্তির স্বাধ পেয়েছিলো।
বলেন, “তোমরা জানো? দেখাও, কিভাবে।
বরং তোমরা ধারনার পেছনে ছুটছো।
এ তোমাদের আন্দাজ।”

বলে দিন, “তবে চুড়ান্ত যুক্তি আল্লাহর।
যে উনি চাইলে তোমাদের সবাইকে হিদায়াত দিয়ে দিতে পারতেন।”

বলে দিন, “নিয়ে আসো তোমাদের সেই সাক্ষিকে
যে সাক্ষ্য দেবে এই সব আল্লাহ হারাম করেছেন।”
তারা সাক্ষ্য দিলে, আপনি তাদের সাথে সাক্ষ্য দেবেন না।
তাদের ইচ্ছা মত চলবেন না
যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে,
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না,
যারা অন্যদেরকে তাদের রবের সমান মনে করে।

বলে দিন,
এসো বলে দেই তোমাদের রব কি হারাম করেছেন।
তোমাদের রবের সাথে শিরক করবে না।
পিতা-মাতার সাথে এহসান করবে।
দারিদ্রতার কারনে সন্তানদের হত্যা করবে না,
তাদেরকে-তোমাদেরকে আমি খাওয়াই।
খারাপ কাজের কাছে যাবে না, গোপন বা খোলামেলা।
আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তাদেরকে হত্যা করবে না, ন্যয়ভাবে ছাড়া।
এই তোমাদের প্রতি নির্দেশ, যেন তোমরা বুঝো।

এতিমদের মালের কাছে যাবে না
ভালো উদ্যেশ্য ছাড়া, যতক্ষন না সে বয়সে পৌছে।
ওজন-পরিমান পূর্ন করো ন্যয় ভাবে।
আমি কাউকে সাধ্যের বেশি কষ্ট দেই না।
আর কথায় ন্যয়নিষ্ঠ হও, যদিও আপনজনের ব্যপারে হয়।
আল্লাহর ওয়াদা পূর্ন করো।
এ তোমারদের জন্য নির্দেশ, যেন মনে রাখো।

এ আমার সোজা পথ, এ পথে চলো।
অন্য পথগুলোতে চলো না, এ পথ থেকে সরে যাবে।
এ তোমাদের জন্য নির্দেশ, যেন তাকওয়া করো।

এর পর মুসাকে কিতাব দিয়েছি,
পূর্নাঙ্গ তার জন্য যে সৎ কাজ করে,
সব কিছুর ব্যখ্যা, হিদায়াত, রহমত দিয়ে।
যেন আল্লাহর সাথে সাক্ষাতে তারা বিশ্বাসি হয়।

এটা কিতাব। নাজিল করেছি বরকতময় করে।
এর অনুসরন করো, ভয় করো, যেন তোমরা রহমত পাও।

পাছে তোমরা বলো, “কিতাব আমাদের আগে দুই দলের উপর নাজিল হয়েছিলো।
আমরা জানতাম না এতে কি ছিলো।”

বা বলো, “যদি আমাদের উপর কিতাব নাজিল হতো
তবে তাদের থেকে বেশি সৎপথে থাকতাম।”
এখন তোমাদের রব থেকে স্পষ্ট প্রমান, হিদায়াত, রহমত এসেছে।
তার থেকে বড় জালিম কে, যে আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলে?
আর তা এড়িয়ে চলে।
যারা আমার আয়াত এড়িয়ে চলে তাদের জন্য জঘন্য শাস্তি এড়িয়ে চলার জন্য।

তারা কি তবে অপেক্ষায় আছে
যে তাদের কাছে কোনো ফিরিস্তা আসবে,
বা আপনার রব নিজে আসবেন,
বা আপনার রবের কাছ থেকে কোনো প্রমান আসবে?

যে দিন আপনার রবের থেকে প্রমান আসবে,
সে দিন কারো ঈমান তার কাজে আসেবে না,
যদি না সে এর আগেই ঈমান এনে থাকে
এবং ঐ ঈমান নিয়ে সৎ কাজ করে থাকে।

বলে দিন, “তোমরা অপেক্ষায় থাকো। আমরাও অপেক্ষায় আছি।”

যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করে ভাগ হয়েছে দলে দলে,
তাদের ব্যপারে আপনার কোনো দায় নেই।
তাদের দায়িত্ব আল্লাহর উপর।
উনি তাদেরকে জানাবেন তারা কি করে এসেছে।

যে কোনো সোয়াব নিয়ে আসবে, তার জন্য এর দশ গুন।
যে গুনাহ নিয়ে আসবে, তার সমান পাবে। জুলুম করা হবে না।

বলে দিন, “আমার রব আমাকে সরল পথ দেখিয়েছেন,
সত্য ধর্ম, ইব্রাহীমের ধর্ম, এক খোদার।
উনি মুশরিক ছিলেন না।”

বলে দিন আমার নামাজ, কোরবানী, জীবন, মরন আল্লাহর জন্য!
উনি বিশ্বের রব।

উনার কোনো শরিক নেই।
এর হুকুম আমাকে দেয়া হয়েছে।
আমি মুসলিমদের মাঝে প্রথম।

বলে দিন, “তবে কি আমি আল্লাহকে বাদ দিয়ে রব খুজবো?
অথচ উনি সব কিছুর রব!”
প্রত্যেকের কামাই তার নিজের জন্য।
কেউ অন্যের বোঝা বহন করবে না।
এর পর তোমাদের রবের কাছে ফিরে আসবে।
তোমাদের জানানো হবে যা কিছু নিয়ে তর্ক করতে সে বিষয়ে।

উনি তোমাদেরকে পৃথিবীর খলিফা বানিয়েছেন।
তোমাদের কিছুকে অন্যেদের উপরে সম্মান দিয়েছেন,
এ দিয়ে তোমাদেরকে পরিক্ষা করার জন্য।
তোমার রব দ্রুত শাস্তি দেন!
উনি দয়ালু ক্ষমাময়!