(সুরা আল-আনআম প্রথম ৬ পৃষ্ঠা)

 
Written By Sanjir Habib On Aug-6th, 2017

(সুরা আল-আনআম প্রথম ৬ পৃষ্ঠা)

দয়ালু দয়াময় আল্লার নামে।

আলহামদুলিল্লাহ,
যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন,
আলো-আধার এনেছেন,
এর পরও কাফেররা শরিক করে।

তিনি তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।
ঠিক করেছেন সময়কাল।
সময়কাল ঠিক করা আছে উনার কাছে।
এর পরও তোমরা সন্দেহ করো।

উনি আল্লাহ! আসমানে-জমিনে।
জানেন তোমাদের প্রকাশ্য-গোপন।
জানেন তোমাদের কামাই।

এমন কোনো আয়াত আসে নি তাদের রব থেকে
যে তারা সে থেকে মুখ ফিরায় নি।

হক আসার পরে তারা সেটাকে মিথ্যা বললো।
শিগ্রি তাদের কাছে সেই খবর আসছে
যা নিয়ে তারা হাসাহাসি করে।

তারা কি দেখে না, তাদের আগের জেনারেশনগুলোকে কিভাবে ধ্বংশ করেছি?
দুনিয়াতে তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এমন করে, যেভাবে তোমাদেরকে করি নি
আকাশকে পাঠিয়েছিলাম বৃষ্টি দিয়ে, নদী তাদের নিচে।
এরপর তাদেরকে ধ্বংশ করেছি গুনাহের কারনে।
আরম্ভ করেছি নতুন যুগ।

যদি আপনার উপর কাগজের কিতাব নাজিল করতাম।
সেটাকে হাত দিয়ে ছুয়ে কাফেররা বলতো, এ পরিষ্কার যাদু।

তারা বলে, কেন ফিরিস্তা নামান না?
আমি ফিরিস্তা নামালে বিষয়টা শেষ হয়ে যেতো,
এর পর আর সময় দেয়া হতো না।

ফিরিস্তা পাঠালেও, তাকে মানুষ করে পাঠাতাম
ঐ কাপড় পড়িয়ে যা তারা পড়ে।

আপনার আগেও রাসুলদের নিয়ে হাসাহাসি হতো।
এর পর ব্যঙ্গকারীদের কথাই ব্যঙ্গকারীদের ঘিরে ফেলে।

বলে দিন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমন করে দেখো মিথ্যাবাদিদের কি পরিনতি হয়েছিলো।
বলে দিন, আকাশে-জমিনে যা আছে এগুলো কার?
বলেন আল্লাহর!
উনি নিজের নফসের উপর রহমত লিখেছেন।
তোমাদেরকে একত্রিত করবেন কিয়ামতের দিন, এতে সন্দেহ নেই।
যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে, তারা বিশ্বাস করবে না।

দিনে-রাতে যা শান্ত হয় সব উনার। উনি সব শুনেন, জানেন।
বলে দিন, আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে রক্ষক নিবো?
অথচ উনি আসমান জমিনের প্রতিষ্ঠাতা!

উনি খাওয়ান, উনাকে কেউ খাওয়ায় না।
বলে দিন, আমাকে আদেশ করা হয়েছে, যেন আমি অনুগতদের মাঝে প্রথম হই!
আর আপনি মুশরিকদের কেউ হবেন না।

বলুন, আমি ভয় করি-
আমার রবের অবাধ্য হলে মহা দিনের শাস্তির।
সেদিন যাকে পার করা হবে তার উপর রহম করা হলো।
এটা পরিষ্কার বিজয়।

যদি আল্লাহ আপনাকে বিপদ দেন তবে সেটা সরানোর কেউ নেই, উনি ছাড়া।
যদি ভালো দেন তবে উনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাশীল।
উনি ক্ষমতাসীন উনার দাসদের উপর।
উনি বিচক্ষন, সব জানেন।

বলেন, সবচেয়ে বড় সাক্ষি কি?
বলে দিন, আমার আর তোমাদের মাঝে সাক্ষি আল্লাহ!
আমাকে এই কোরআন ওহি দিয়ে পাঠিয়েছেন
যেন এ দিয়ে তোমাদেরকে হুশিয়ার করি
আর যার যার কাছে এটা পৌছে।

তোমরা কি সাক্ষ্য দিচ্ছো আল্লাহর সাথে আরো ইলাহ আছে?
বলেন, এই সাক্ষ্য আমি দেবো না।
বলেন, বরং উনি একমাত্র ইলাহ!
আর আমি তোমাদের শিরক থেকে মুক্ত।

যাদেরকে কিতাব দিয়েছি
তারা কিতাব এমন করে চিনে, যেমন সন্তানদের চিনে।
যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে তারা বিশ্বাস করবে না।

তার থেকে আর বড় জালিম কে আছে,
যে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়?
বা উনার আয়াতকে মিথ্যা বলে?
জালেমদের উনি সফল করেন না।

সে দিন তাদের সবাইকে এক করবো।
এর পর মুশরিকদের জিজ্ঞাসা করবো
কোথায় তোমাদের অংশিদার?
যাদেরকে কল্পনা করতে?

এর পরে তাদের ফিতনা থাকবে না
শুধু এ ছাড়া,
যে তারা বলবে আমাদের রব আল্লাহর কছম
আমরা মুশরিক ছিলাম না!

দেখেন কিভাবে তারা নিজেদের উপর মিথ্যা বলছে।
দূর হয়ে গিয়েছে আগের বানোয়াট কথা।

তাদের কেউ আপনার কথা শুনতে থাকে।
আমি তাদের অন্তরের উপর আবরন দিয়ে দিয়েছি যেন না বুঝে,
তাদের কানে বধিরতা।

সব নিদর্শন দেখেও তারা বিশ্বাস আনবে না।
এমন কি কাফেররা তর্কে এসে আপনাকে বলে,
এ সব অতীতের কাহিনী।

তারা এ থেকে নিষেধ করে, এ থেকে পলায়।
তারা শুধু নিজেদেরকে ধংশ করছে, না বুঝে।

যদি তখন দেখতে পেতেন,
যখন তাদেরকে আগুনের কাছে দাড় করানো হবে।
বলবে হায়!
যদি আমরা ফিরে যেতে পারতাম,
আর আমাদের রবের আয়াতকে মিথ্যে না বলতাম।
যদি আমরা মু'মিনদের কেউ হতাম।

তাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে যা আগে গোপন ছিলো।
ফিরে গেলেও তারা নিষিদ্ধ কাজেই ফিরে যেতো।
তারা মিথ্যাবাদী।

তারা বলে এই দুনিয়ার জীবনটাই সব।
আমাদের আরেকবার জীবিত করা হবে না।

যদি দেখতে পেতেন,
যখন তাদেরকে দাড় করানো হবে তাদের রবের সামনে।
উনি বলবেন, এটাই কি সত্য না?
তারা বলবে, হ্যা আমাদের রব!
উনি বলবেন, তবে আযাব ভোগ করো তোমাদের কুফরির জন্য।

তারা ক্ষতিগ্রস্থ যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতকে মিথ্যা বলে।
হটাৎ কিয়ামত চলে আসবে।
তারা বলবে, আফসোস! আমরা অলসতা করতাম।
নিজেদের পিঠে নিজ পাপের বোঝা তুলবে।
জেনে নিয়ো, তাদের বোঝা নিকৃষ্ট।

দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া কিছু না।
আখিরাতের ঘর তাকওয়াকারীদের জন্য উত্তম।
তোমরা কি বুঝো না?

আমি জানি, তাদের কথা আপনাকে কষ্ট দেয়।
আপনাকে তারা মিথ্যাবাদী বলে না-
বরং জালেমরা আল্লাহর আয়াতকে অবিশ্বাস করে।

আপনার আগের রসুলদেরকেও মিথ্যাবাদি বলা হতো।
উনারা এর উপর সবর করতেন।
অত্যাচারিত হতেন, আমার সাহায্য আসার আগ পর্যন্ত।
আল্লাহর কালামকে কেউ বদলাতে পারে না।
রসুলদের কিছু খবর আপনার কাছে পৌছলো।

তাদের প্রত্যাখ্যান যখন আপনার কাছে বড় মনে হয়-
যেন পারলে মাটিতে সুড়ঙ্গ খুজতেন
বা আকাশে উঠার সিড়ি-
আর তাদেরকে প্রমান এনে দিতেন।
অথচ আল্লাহ চাইলে তাদেরকে এক সাথে হিদায়াত দিতে পারতেন।
আপনি জাহেলদের কেউ হবেন না।

যারা শুনে তারা জবাব দেয়।
আর মৃত - তাদেরকে আল্লাহ পূনঃজীবিত করবেন,
এর পর উনার দিকে ফিরা।

তারা বলে,
কোনো নিদর্শন আসে না কেন তার উপর? তার রব থেকে?
বলে দিন, আল্লাহর ক্ষমতা আছে নিদর্শন পাঠানোর,
তাদের অধিকাংশ জানে না।

পৃথিবীর বুকে যত জীব আছে,
যত পাখি উড়ে দুই ডানায়,
সব তোমাদের মত উম্মাহ।
কিতাবে কিছু বাদ রাখি নি।
এরপর তাদের রবের কাছে সবার হাশর।

যে আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে
সে বোবা-কালা অন্ধকারে।
যাকে ইচ্ছে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন,
যাকে ইচ্ছে সরল পথে চালান।

তাদেরকে বলেন,
বলতো যদি আল্লাহর আযাব আসে, বা কিয়ামত
তবে কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকবে? যদি সত্যবাদী হও।

বরং উনাকেই ডাকবে।
উনি সারিয়ে দেবেন যে কারনে ডেকেছো, যদি চান।
তোমরা তখন ভুলে যাবে যাদের শিরক করেছো।

আপনার আগের উম্মতদের কাছেও রসুলদের পাঠিাতাম।
তাদেরকে দুঃখ-কষ্ট দিয়েছিলাম যেন তারা আকুতি করে।

তবে শাস্তি আসার পর তারা আকুতি কেন করে নি?
তাদের অন্তর কঠিন হয়েছিলো,
আর শয়তান তাদের কাজকে সুন্দর করে ধরেছিলো।

মনে করিয়ে দেবার পরও যখন তারা ভুলে গেলো,
তখন খুলে দেই সব কিছুর দরজা।
সব পেয়ে তারা খুশি হয়,
এর পর তাদেরকে ধরি, হটাৎ!
তারা হতাশ হয়ে যায়।

এর পর জালেমদের শিকড় কেটে গেলো,
আলহামদু লিল্লাহ, রাব্বিল আলামিন।

তাদেরকে বলেন,
বলতো যদি আল্লাহ তোমাদের দৃষ্টি-শ্রবন শক্তি তুলে নেন,
আর তোমাদের অন্তর সিল করে দেন,
তবে কোন ইলাহ ফিরিয়ে দিবে, আল্লাহ ছাড়া?
দেখেন আমি কত ভাবে আয়াত বর্ননা করছি।
এর পরও তারা এড়িয়ে চলে।

বলে দিন, যদি তোমাদের উপর আল্লাহর আযাব আসে হটাৎ দৃশ্যমান হয়ে
তবে জালেম কওমই ধ্বংশ হবে।

আমি রসুলদের পাঠাই সুসংবাদ আর হুশিয়ার জানাতে।
যে ঈমান আনে সৎ কাজ করে তার ভয় নেই, দুঃখিত হবে না।
আর যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে,
তাদেরকে আযাব স্পর্শ করবে, ফাসেকির কারনে।

বলে দিন,
আমি বলছি না আমার কাছে আল্লাহর খাজানা আছে।
আর গায়েবের খবরও আমার জানা নেই।
আর তোমাদেরকে এও বলছি না যে আমি ফিরিস্তা।
আমি শুধু তাই অনুসরন করি, যে ওহি আমার উপর আসে।
বলুন,
অন্ধ আর অন্ধ-না, দুজন কি সমান?
তোমরা চিন্তা কর না?

এটা দিয়ে আপনি সাবধান করেন তাদেরকে,
যাদের ভয়- তাদের রবের কাছে একত্রিত হওয়া।
উনি ছাড়া কোনো রক্ষাকারী-সুপারিশকারী নেই।
তাই তারা যেন তাকওয়া করে।

আর তাদেরকে দূর করবেন না,
যারা নিজেদের রবকে সকাল-সন্ধায় ডাকে, সন্তুষ্টি চেয়ে।
তাদের কোনো হিসাব আপনার উপর নেই।
আপনার কোনো হিসাব তাদের উপর নেই।
দূর করলে বরং আপনি জালেমদের একজন।