প্রসংগ : "ব্লক"

প্রথমে সুন্নাহ দেখি

কেউ কথা বলতে থাকলে সম্পূর্ন ঘুরে তার দিকে মুখ করে শুনতেন।

সে যতক্ষন কথা বলছে ততক্ষন উনি কথা শুনতেন।

... এবং আরো। উনার উপর সালাম।

কিন্তু আমি নিজের ক্ষেত্রে দেখছি উল্টো করছি

হাজার হাজার লোক। সবারই কিছু বলার আছে। প্রত্যেকেরই কিছু চাওয়ার আছে। কিন্তু সবার সাথে সে যতক্ষন কথা বলতে চায় ততক্ষন কথা শুনতে থাকলে সারা দিন পার হয়ে যাবে কথা শুনতে শুনতে এর পরও ১০০০ লোকের মাঝে ২০ জনের সব কথাও শোনা হবে না।

পার্থক্য কি?

বর্তমানে তাকাই। আমাদের এক একজনের ফলোয়ার ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার। আর শুধু ফলোয়াররাই তো কেবল কথা বলতে চায় না। সবাই চায়। ননফলোয়ার দূরের কাছের। যেই আমাকে তার কাছে পায় সবার কিছু কথা আছে।

এবং কাছে পাওয়া এখন সহজ

রাস্তায় বেরুলেই আমাদের এই এলাকায় কেবল ২ লক্ষ মানুষ থাকে। এই শহরে ২ কোটি। দেশের বাকিদের বাদ দিলেও বিদেশেরও যে কেউ চাইলেই কথা বলতে পারছে।

এবং সবার কিছু না কিছু চাওয়ার আছে

সারা জীবনে যাদেরই কিছু না কিছু দান করেছিলাম তাদের প্রত্যেকেই ১০ বছর পার হলেও প্রতি সপ্তাহে আমার সাথে "কিছু কথা" বলতে চায় -- আশা, যদি কনভিন্সড করতে পারে আমাকে তাদেরকে এই বার কিছু দেয়ার জন্য।

পরিচিত অল্প-পরিচিতরা চায় তাদের ছেলে পাশ করে বের হয়েছে যদি তার একটা চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি আমাদের কম্পানিতে।

বা সেইলস ম্যান। চায় আমি তাদের কিছু প্রমোট করি। দ্বিনের গ্রুপগুলো চায় আমি তার পক্ষে বলি। তার দলে যোগ দেই। এটা বা ওটা না বলি।

মসজিদে গিয়ে বসে থাকবো? ইমাম সাহেবও কথা বলতে চায়। চায় তাদের মাদ্রাসারা জন্য এই মাসেও দান তুলতে।

সবারই কিছু চাওয়ার আছে। হাজার হাজার জনের। কিন্তু প্রথমে চাওয়ার আগে আমার সাথে কথা বলতে চায়, চায় একটা সম্পর্কের চেষ্টা করতে। একটা সিড়ি সেই চাওয়ার দিকে।

তাই কারো কথা শেষ হয় না।

"সবাইকে খুশি রাখতে পারবেন না"

কিন্তু সমস্যা। ব্যাক্তি জীবনে এলাকায় হয়তো দিনে ১০ জনের বেশি মানুষের সাথে দেখা হয় না। কিন্তু এই নেট মোবাইল কমুনিকেশনের যুগে দিনে ১০ হাজার লোক আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। সবাইকে ভালো ব্যবহার করেও খুশি রাখা যায় না। কেবল ব্যক্তি জীবনে যে ১০ জনের সথে দেখা -- কথা বলে তাদেরকে খুশি রাখার চেষ্টা করা সম্ভব।

কেবল আমার এ অবস্থা?

সে জবাব দিলো দিনে ১০০০ ইমেইল আসে আমার ইনবক্সে প্রতিদিন। ১০ টা উত্তর দেই তার পর বাকি সব ডিলিট। পরের দিনে আবার ১০০০ ইমেইল।

সর্বত্রই এই অবস্থা। কোনো লোক একটু এক্সপোজার পেলেই হলো। তার এই অবস্থা। এক্সপোজার না পেলেও মানুষ খুজে নেয় তাকে যাকে তার দরকার।

তাই খারাপ ব্যাবহার? নাকি ব্লক?

এত এত মানুষের দরকার নেই জীবনে যোগাযোগ করার জন্য। কথা বলার, চ্যাট করার জন্য। ছাত্র জীবনে সময় ছিলো তখন করতাম। এখন দরকার নেই।

নিজের আত্মিয়দের দিকে তাকাই। নিজের পরিবারের দিকে তাকাই। নিজের পিতা মাতা ভাই বোনের দিকে থাকাই। এর পর এলাকা বাসি। এরাই যথেষ্ট।

মোবাইল - নেট - ফেসবুক - চ্যাট - ইমেইল -- এগুলোতে প্রয়োজনের বাইরে কিছু পেলেই ব্লক। কারন একটাই -- দরকার নেই। সেধে বিপদ আনা।

এমন কি "সুন্দর ব্যবহার করে এর পরে তাকে না বলা"-র ও দরকার নেই। কিছু বলারই দরকার নেই। কোনো জবাব দেয়ার দরকার নেই।

তাই ব্লক।

শেষে সুন্নাহতে ফিরে আসি

বিস্তারিত পাবেন তফসিরের কিতাবে। আমি আলেমদের থেকে শুনেছি।

তাই হয়তো যা করছি সেটা অনেক বড় পাপ না।
এভাবেই পথ চলা।