খারেজিরা কুফায় আত্মপ্রকাশ করার পর আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহকে ধরে তারা বলে,

 
Written By Sanjir Habib On Feb-12th, 2017

খারেজিরা কুফায় আত্মপ্রকাশ করার পর আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহকে ধরে তারা বলে,
: কুফর থেকে তৌবা কর, হে শায়েখ!

উনি বলেন,
: আমি সকল কুফর থেকে আল্লাহর কাছে তৌবা করলাম।
তারা তাকে ছেড়ে দেয়।

তাদের নেতা এ ঘটনা শুনে বলে,
: উনি কুফর থেকে তৌবা করেছেন ঠিক। তবে এ দ্বারা বুঝিয়েছিলেন তোমরা যেই পথে আছো সেই পথকে!

তারা আবার উনার কাছে ফিরে আসে।

তাদের নেতা বলে,
: হে শায়েখ। আপনি কুফর থেকে তৌবা করেছেন! তবে এটা দিয়ে আমরা যে পথে আছি সেটা বুঝিয়েছেন!

: তোমরা এটা ধারনা থেকে বলছো? নাকি জেনে?
: না, ধারনা।
: আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, { يا أيها الذين آمنوا اجتنبوا كثيرا من الظن إن بعض الظن إثم } যারা ঈমান এনেছো! বেশি বেশি ধারনা করা থেকে বিরত থাকো। কারন কিছু ধারনা পাপজনক।

তাই এটা তোমারদের একটা পাপ হলো।
আর প্রতিটা পাপই কুফর। [তাদের মতে]
বরং তোমরা প্রথমে কুফর থেকে তৌবা করো।

: সত্য বলেছেন শায়েখ। আমি কুফর থেকে তৌবা করলাম।

এর পর তারা একদিন জানতে পারে উনি আহলে কিবলা কাউকে পাপের জন্য কাফির বলেন না। তখন আবার উনার কাছে আসে মুনাজেরা করার জন্য

তারা বলে,
: মসজিদের দরজায় দুটো জানাজা হাজির হয়েছে। প্রথমটা এক লোকের।
সে পেট ভরে মদ খায়।
এর পর গলা পর্যন্ত খায়।
এর পর সেই মদে ডুবে মারা যায়।

দ্বিতীয়টা এক মহিলার যে জিনা করে,
এমন কি গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
এর পর আত্মহত্যা করে।

আবু হানিফা জিজ্ঞাসা করলেন,
: তারা কোন ধর্মের? তারা কি ইহুদি?
: না
: খৃষ্টান?
: না
: অগ্নি পুজারী?
: না।
: তাহলে তারা কোন ধর্মের অনুসারী ছিলো?
: তারা ঐ ধর্মের অনুসারি ছিলো যারা লা ইলাহাইল্লাহ, এবং মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ এর সাক্ষ্য দিতো। ﷺ

: তাহলে আমাকে বলো, এই সাক্ষ্য দিলে ঈমানের কত ভাগ হয়? তিন ভাগের এক ভাগ? চার ভাগের এক ভাগ? নাকি পাচ ভাগের এক ভাগ?

: ঈমান আংশিক হতে পারে না।
: তাহলে এটা ঈমানের কত অংশ?
: এটা পূর্ন ঈমান।
: তোমরা যদি স্বিকার করলে ও মেনে নিলে তারা মু'মিন তবে আমাকে কি জিজ্ঞাসা করতে এসেছিলে?
: আমরা প্রশ্ন করতে এসেছি: তারা কি জান্নাতি হবে? নাকি জাহান্নামি?

আবু হানিফা বললেন,
: তোমারা যদি মানতে না চাও তবে
আমি তাদের ব্যপারে সেই কথাই বলবো যা আল্লাহর নবী ইব্রাহিম আ: বলেছিলেন উনার কওম সম্পর্কে যখন তারা সবচেয়ে বড় পাপ করছিলো:
“আমার রব! তারা বহু লোককে বিপথগামী করেছে।
যে আমাকে অনুসরন করে, সে আমার লোক।
যে আমার অবাধ্য হয়, তবে আপনি দয়ালু ক্ষমাশিল।” - সুরা ইব্রাহিম।

আর তাদের ব্যপারে বলবো একই কথা, যা আল্লাহ নবী ঈসা আ: বলেছিলেন উনার কওম সম্পর্কে যখন তারা সবচেয়ে বড় পাপ করেছিলো,
“যদি আপনি তাদের আযাব দেন তবে তারা আপনার দাস
আর যদি ক্ষমা করেন তবে আপনি সর্বশক্তিমান জ্ঞানী।” - সুরা মায়িদা।

আর তাদের ব্যপারে বলবো একই কথা যা আল্লাহর নবী নুহ আ: বলেছিলেন,
“লোকেরা বললো, আমরা আপনাকে বিশ্বাস করবো? অথচ সবচেয়ে নিচু লোকেরা আপনাকে অনুসরন করে!
উনি তাদের জবাব দিলেন, তারা আগে কি করতো সেটা জেনে আমার কি হবে?
তাদের হিসাব আমার রবের উপর।
তোমরা যদি বুঝতে!” - সুরা শুরা।

আর তাদের ব্যপারে বলবো আল্লাহর নবী নুহ যা বলেছিলেন, নবীদের সবার উপর সালাম, এবং আমাদের নবী মুহাম্মদ ﷺ এর উপর
“আমি তোমাদের
বলছি না যে আমার কাছে আল্লার ভান্ডার আছে,
বলছি না আমি গায়েবে জানি,
বলছি না আমি ফিরিস্তা,
বা তাদের মত বলছি না, যারা চোখ নিচের দিকে নামিয়ে বলে, আল্লাহ কক্ষনো তাদের ভালো কিছু দিবেন না।
আল্লাহ জানেন তাদের অন্তরে কি আছে!
বরং এ করলে আমি হবো পাপী।” - সুরা হুদ।

এর পর লোকেরা তাদের অস্ত্র ফেলে দিলো
: আপনি আমাদের সকল পথ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমরা আল্লার কাছে তৌবা করলাম। আল্লাহ আপনাকে ফজল, হিকমত, ইলম দান করুন।

মানাকিব আবু হানিফা - ১০৮-১৫১

[ মূল আরবী যেখান থেকে অনুবাদ করা হয়েছে ]
https://www.facebook.com/kesas.wa.ebar/posts/1354230404598643

#HabibTranslation